ওগো বধূ সুন্দরী ১৯৮১ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত একটি বাংলা কমেডি চলচ্চিত্র। এই ছবিটি পরিচালনা করেন সলিল দত্ত। এই ছবিটিই বিশিষ্ট বাঙালি অভিনেতা উত্তম কুমারের সর্বশেষ ছবি। ছবিটিতে অভিনয় অসমাপ্ত রেখেই তার মৃত্যু ঘটেছিল। ছবির শেষাংশে “ও ড্যাডি, ও মাম্মি” গানের দৃশ্যায়নের সময় প্রবীর কুমার উত্তম কুমারের ‘বডি ডবল’ হিসেবে কাজ করেন। ডাবিং-এর সময় উত্তম কুমারের ছোটোভাই তরুণ কুমারের কণ্ঠস্বর ব্যবহৃত হয়।
ওগো বধূ সুন্দরী ছবিতে সুরারোপ করেছিলেন বাপি লাহিড়ী। ছবিটি জর্জ বার্নার্ড শ-এর পিগম্যালিয়ন নাটক অবলম্বনে নির্মিত হয়।
যদিও চলচ্চিত্রায়নের ক্ষেত্রে প্রধানত জনপ্রিয় ব্রিটিশ মিউজিক্যাল মাই ফেয়ার লেডি ছবিটির ছায়া অবলম্বন করা হয়।
ওগো বধু সুন্দরী’র সব ঘটনা এখনও চোখের সামনে ভাসছে শেষ দু’দিনের কথা বিশেষ করে। একুশে জুলাই এর প্রথম শট শেষ হল। লাঞ্চ পর্যন্ত অনায়াসে বেশ কটি শট দিল উত্তম। ভীষণ জলি মুড। লাঞ্চ ব্রেক হল। উত্তম ফিরে গেল মেকআপ রুমে। বাড়ি থেকে দুপুরের খাবার এল উত্তম খেল না। জিজ্ঞাসা করলাম, খেলে না – কেন? উত্তম জবাব দিল খেলে আর কাজ করা যায় না।
ঘণ্টাখানেক পরে আবার কাজ শরু হল। বেশ কয়েকটা শট ভাল ভাবেই হয়ে গেল। হঠাৎ একটা শটের মধ্যে উত্তম কপালে হাত দিয়ে চোখ দুটো বন্ধ করল, সকলের চোখই উত্তমের দিকে। দেখা গেল কপাল দিয়ে রক্ত পড়ছে। আমি তাড়াতাড়ি এগিয়ে গিয়ে বসিয়ে দিলাম উত্তমকে।
দৃশ্যটা ছিল একটা জয়পুরি অ্যাশট্রে ছুড়ে ফেলার দৃশ্য।সেটারই একটা টুকরো দরজায় লেগে ওর কপালে এসে লাগে আমি শুটিং প্যাকআপ করে দিলাম তখন সময় পাঁচটা মেকআপ রুমে আমি উত্তমকে নিয়ে ময়রা স্ট্রীটে ফিরে এলাম খবর দেওয়া হল ডাক্তারকে।
উত্তমের একজন প্রাইভেট ডাক্তার কিছুক্ষণের মধ্যেই এসে গেলেন, তিনি দেখে বললেন এ কিছুই না কিছু ওষুধ দিয়ে তিনি চলে গেলেন।
আমি বললাম, তাহলে শুটিং বন্ধ থাক বুধবারে দেখা যাবে কি করা যায়। আমি প্রোডিউসারকে এখনই জানিয়ে দিচ্ছি, উত্তম প্রতিবাদ করলো দূর দূর এর জন্যে শুটিং বন্ধের কোন মানে হয় ? কাজ করতে গেলে এরকম দু একটা ছোট বড় ঘটনা ঘটেই থাকে।
এইতো সেবার আমি অমিতাভর মাথায় সজোরে লাঠির বাড়ি মেরে দিলাম অমিতাভ দুহাতে মাথা চেপে বসে পড়লো টাইমিং এর গন্ডোগাোল হয়েছিল। আমি লাঠিটা মারবার আগেই ওর মাথা নিচ করার কথা কিন্তু করেনি। ফলে মাথায় লেগে গেল। পরের দিনতো অমিতাভ যথারীতি শুটিং করলো, এসব নিয়ে ভাববার কিছু নেই।
তেইশ জুলাই, বুধবার। সেদিন ও অন্যদিনের মত সকাল। এগারটা পনের নাগাদ উত্তমকুমার টেকনিসিয়ানস, স্টুডিওতে এল। পরনে | সাদা পাজামা পাঞ্জাবি।
আমি তখন লাইটম্যানদের বললাম ছোট জোনে আলোর ব্যবস্থা কর। এত বড় সিড়ি দিয়ে উত্তম বাবুর বার বার ওঠা নামায় কষ্ট হবে। এ কথা শুনে উত্তম ক্রদ্ধ হয়ে বলল, না না ওভাবে মুড আসে না। অনেক খানি জায়গা না পেলে মুভমেন্টে অসুবিধে হয়। বাধ্য হয়ে বড় জোনের ব্যবস্থা হল।
শেষ হল ওর জীবনের শেষ শট, উচ্চারিত হল শেষ সংলাপ। বুধবারের কাজ শেষ হল, শেষ হল ওই সেটের কাজ। তখনও পর্যন্ত কেউই জানে না, এই তার শেষ অভিনয়। এমন কি উত্তমও না।
গানের লিরিক্স এর জন্য এখানে ক্লিক করুণ :-
এই ছবির গানের লিরিক্স এর জন্য এখানে ক্লিক করুণ :-
কৃ্তজ্ঞতা – অরুণাদোয় ভট্টাচার্য
তথ্য আনন্দলোক পত্রিকা নেওয়া
পরিচালক সলিল দত্তের দেখা ওগো বধূ সুন্দরী ছবির শেষ দৃশ্য
Added by
admin
WRITE A COMMENT
You must be logged in to post a comment.
WRITE A COMMENT
You must be logged in to post a comment.
No comments yet